এ কেমন পুজো
– সত্যেন্দ্রনাথ পাইন
অনুপ নাচছে, মান্টু নাচছে নাচছে ক’জন ছেলে
কেউ তখন হায় খায় যে ঘুসি ভাতের থালা ফেলে
দশ বিশ নয় হাজার দু’হাজার হবে দুগ্গোপূজো
মদ মাতালে অসুরগুলো করছে পূজো-পূজো-পূজো
মানবিকতা, কাশফুলের আর নাইকো শুভ্রতা?
শিউলি শরৎ বলেনা আর জীবনের কথকতা।
ধনী গরীব বর্ণময় বন্ধনে কিসের কথা ভাবে
বেদনার সরোবরে পাপড়ি মেলে উপেক্ষার সৌরভে?
পূজো এখন করছে কারা? পূজো কিসের তরে?
মননে যতনে স্বপ্নে জাগরণে যারা কাঁদে কুঁড়ে ঘরে?
সমাজ আর পবিত্র নয় শারদীয়ার বরে
উৎসব-হৈ-হুল্লোড় পটকা বাজি শুধুই সরোবরে।
পূজো মানে তো বিনয়-শিক্ষা-ভ্রাতৃত্ব বন্ধন
সবার মনে কাঁসর ঘণ্টায় কাটে নানান দূষণ
পূজো মানে দু:খের মাঝে আত্মীয়তার প্রশ্ন
পূজো মানে বাঙালি মনে বিকশিত হর্ষ।
পূজো মানে কি শুধু প্যান্ডেল আর আলোর রোশনাই
কবিরা আর বলেনা কথা বলে– দূর ছাই।
পূজো মানে কি দাদাদের প্রকাশিত ক্ষমতা
সুরভী রাত শরৎ আবহে বিইবে নানান দু:খব্যাথা
পূজোর রাতে কেন বিশ্বমাতার ভয়ে কাঁপছে বুক
দুয়োরানিরা লুকিয়ে ঘরে ভোগে নানান দুঃখ
পূজো মানে মহালয়া পূজো মানে অঞ্জলী
পূজো মানে ধরাধামে মায়ের পদধুলি
পূজা হচ্ছে বাজছে দৈত্যাকার মাইক
দুয়োরানিদের কাটছে বিষাদে যদি হয় ষ্ট্রাইক
পূজো মানে দাদা দিদিদের আহ্লাদে রাত কাবার
দুয়োরানিদের ঘুম ধরে না জোটে একটু খাবার।
এমন পূজোয় নাইকো জুটুক নতুন জামাকাপড়
কেউ যেন না কাটায় নিশি খেয়ে খিল চড় চাপড়
পূজো আসুক পূজো হোক সবার ঘরে ঘরে
সুখসমৃদ্ধিতে ভরুক সবার বিশ্বপারাবারে।।